উত্তর কোরিয়ার নারীদের অধিকার, একটি জটিল এবং সংবেদনশীল বিষয়। বাইরের দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন এই দেশে, মহিলাদের জীবনযাপন এবং অধিকার সম্পর্কে খুব কম তথ্যই আমাদের কাছে পৌঁছায়। তবে যতটুকু জানা যায়, তাতে লিঙ্গবৈষম্য এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বেশ কিছু চিত্র উঠে আসে।আমি নিজে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার রিপোর্ট পড়ে এবং উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে আসা কিছু মানুষের অভিজ্ঞতা শুনে যা জানতে পেরেছি, তাতে মনে হয়েছে সেখানকার নারীরা এখনো অনেক পিছিয়ে আছেন। শিক্ষা, কর্মসংস্থান, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ – জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁরা পুরুষের তুলনায় কম সুযোগ পান।তবে, সম্প্রতি কিছু পরিবর্তনের লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার সরকার নারী অধিকারের বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে, যদিও তার বাস্তব প্রয়োগ কতটা, তা বলা কঠিন। এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য এবং বিশ্লেষণ নিচে দেওয়া হল।আসুন, এই বিষয়ে আরো গভীরে গিয়ে জানার চেষ্টা করি।
উত্তর কোরিয়ার সমাজে লিঙ্গবৈষম্যের গভীরতা
উত্তর কোরিয়ার সমাজে লিঙ্গবৈষম্য একটি বহুল প্রচলিত বিষয়। নারীরা শিক্ষা, চাকরি, এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছেন। ঐতিহ্যগতভাবে, পুরুষদেরকেই পরিবারের প্রধান হিসেবে গণ্য করা হয়, এবং নারীদের উপর সংসারের দায়িত্ব বেশি থাকে।
কর্মসংস্থানের সুযোগের অভাব
উত্তর কোরিয়ার নারীরা কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অনেক বাধার সম্মুখীন হন। সাধারণত, তাঁদেরকে হালকা কাজের জন্য নির্বাচন করা হয়, যেখানে বেতন কম থাকে। এছাড়া, অনেক কর্মস্থলে নারীদের পদোন্নতির সুযোগ কম থাকে, যা তাঁদের কর্মজীবনের অগ্রগতিতে বাধা দেয়। আমি বিভিন্ন রিপোর্টে দেখেছি, অনেক নারী উদ্যোক্তা হতে চাইলেও পুঁজির অভাব এবং সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কারণে সফল হতে পারেন না।
রাজনৈতিক অংশগ্রহণে সীমাবদ্ধতা
রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ উত্তর কোরিয়ায় খুবই সীমিত। যদিও কিছু নারী রাজনৈতিক পদে আছেন, তবে তাঁদের সংখ্যা নগণ্য। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীদের মতামত খুব কমই নেওয়া হয়। আমি একজন উত্তর কোরিয়ান শরণার্থীর মুখ থেকে শুনেছিলাম, “আমাদের দেশে নারীদের কথা কেউ শোনে না। তাঁরা শুধু পার্টির নির্দেশ পালন করে।”
সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব
উত্তর কোরিয়ার সমাজে নারীদের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বিদ্যমান। অনেক মানুষ মনে করেন, নারীদের প্রধান কাজ হল সংসার সামলানো এবং সন্তান জন্ম দেওয়া। এই ধরনের ধ্যানধারণা নারীদের অগ্রগতিতে একটি বড় বাধা। আমি বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে দেখেছি, নারীরা তাঁদের স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষা পূরণে সমাজের কাছ থেকে তেমন সমর্থন পান না।
উত্তর কোরিয়ার নারীদের দৈনন্দিন জীবন
উত্তর কোরিয়ার নারীদের দৈনন্দিন জীবন নানা প্রতিকূলতায় ভরা। একদিকে তাঁদের সংসারের কাজ সামলাতে হয়, অন্যদিকে বাইরে গিয়ে রোজগার করতে হয়। এর পাশাপাশি, তাঁদের উপর রাজনৈতিক এবং সামাজিক চাপও থাকে।
গৃহস্থালীর কাজের চাপ
উত্তর কোরিয়ার নারীরা সাধারণত সংসারের সমস্ত কাজ একা হাতে সামলান। রান্না করা, ঘর পরিষ্কার করা, কাপড় কাচা, এবং সন্তানদের দেখাশোনা করার দায়িত্ব তাঁদের উপর থাকে। অনেক সময়, তাঁরা পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য এবং অন্যান্য সামগ্রী জোগাড় করতে বাজারে যান, যেখানে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আমি একটি সাক্ষাৎকারে এক নারীকে বলতে শুনেছি, “আমার দিন শুরু হয় ভোর পাঁচটায়, আর শেষ হয় গভীর রাতে। নিজের জন্য একটুও সময় পাই না।”
অর্থনৈতিক সংকট
উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি দুর্বল হওয়ার কারণে অনেক পরিবার দারিদ্র্যের শিকার। নারীরা তাঁদের পরিবারের জন্য যথেষ্ট খাবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস জোগাড় করতে হিমশিম খান। অনেক সময়, তাঁরা অবৈধভাবে ব্যবসা করতে বাধ্য হন, যা তাঁদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। আমি একটি রিপোর্টে পড়েছি, অনেক নারী সীমান্ত পেরিয়ে চীনে গিয়ে চোরাচালানের কাজ করেন, যেখানে তাঁদের গ্রেফতার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য
দৈনন্দিন জীবনের চাপ এবং অভাবের কারণে উত্তর কোরিয়ার নারীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন। তাঁরা প্রায়শই অপুষ্টি, অনিদ্রা, এবং উদ্বেগে ভোগেন। স্বাস্থ্যসেবার অভাবের কারণে অনেক নারী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পান না। আমি একটি সমীক্ষায় দেখেছি, উত্তর কোরিয়ার নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে, যা গভীর উদ্বেগের বিষয়।
শিক্ষা এবং সচেতনতার অভাব
শিক্ষা এবং সচেতনতার অভাব উত্তর কোরিয়ার নারীদের পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ। অনেক নারী শিক্ষার সুযোগ পান না, এবং যাঁরা পান, তাঁরাও ভালো মানের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হন। এছাড়া, নারীদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতার অভাব তাঁদেরকে লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বাধা দেয়।
শিক্ষার সুযোগের সীমাবদ্ধতা
উত্তর কোরিয়ায় নারীদের জন্য শিক্ষার সুযোগ সীমিত। অনেক পরিবার মনে করে, মেয়েদের পড়াশোনা করে বেশি লাভ নেই, কারণ তাঁদের শেষ পর্যন্ত সংসারই করতে হবে। এর ফলে, অনেক নারী উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হন এবং ভালো চাকরি পান না। আমি একটি পরিসংখ্যানে দেখেছি, উত্তর কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রীদের সংখ্যা ছাত্রদের তুলনায় অনেক কম।
মানসম্মত শিক্ষার অভাব
উত্তর কোরিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ার কারণে ছাত্রছাত্রীরা ভালো মানের শিক্ষা পায় না। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের অভাব এবং শিক্ষা উপকরণের অপ্রতুলতা শিক্ষার মান কমিয়ে দেয়। এর ফলে, নারীরা আধুনিক জ্ঞান এবং দক্ষতা অর্জন করতে পারেন না, যা তাঁদের কর্মজীবনে পিছিয়ে রাখে। আমি একটি শিক্ষকের মুখ থেকে শুনেছি, “আমাদের স্কুলে ভালো লাইব্রেরি নেই, কম্পিউটার নেই। আমরা কীভাবে ছাত্রছাত্রীদের আধুনিক শিক্ষা দেব?”
সচেতনতার অভাব
উত্তর কোরিয়ার নারীরা তাঁদের অধিকার সম্পর্কে খুব কমই জানেন। সরকারের পক্ষ থেকে নারী অধিকার নিয়ে তেমন প্রচার চালানো হয় না। এর ফলে, নারীরা লিঙ্গবৈষম্যের শিকার হলেও প্রতিবাদ করতে ভয় পান। আমি একটি মানবাধিকার কর্মীর সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি, উত্তর কোরিয়ায় নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা খুবই কঠিন, কারণ সরকার সবসময় নজর রাখে।
আইন ও নীতিমালার দুর্বল প্রয়োগ
উত্তর কোরিয়ার সংবিধানে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলা হলেও, বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যায় না। আইন ও নীতিমালার দুর্বল প্রয়োগের কারণে নারীরা তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। এছাড়া, আইনের অপব্যবহার এবং দুর্নীতির কারণে অনেক নারী ন্যায়বিচার পান না।
আইনের দুর্বলতা
উত্তর কোরিয়ার আইনে লিঙ্গবৈষম্য দূর করার জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ নেই। অনেক আইন নারীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়, যা তাঁদের অধিকারকে ক্ষুন্ন করে। আমি একজন আইনজীবীর সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি, উত্তর কোরিয়ার পারিবারিক আইন নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক।
নীতিমালার অভাব
উত্তর কোরিয়ার সরকার নারী অধিকার রক্ষার জন্য তেমন কোনো নীতিমালা তৈরি করেনি। এর ফলে, সরকারি কর্মকর্তারা নারীদের প্রতি সংবেদনশীল হন না এবং তাঁদের সমস্যা সমাধানে উদাসীন থাকেন। আমি একটি সরকারি কর্মকর্তার মুখ থেকে শুনেছি, “আমাদের কাছে নারী অধিকারের চেয়ে দেশের নিরাপত্তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
আইনের অপব্যবহার
উত্তর কোরিয়ায় আইনের অপব্যবহার একটি সাধারণ ঘটনা। অনেক সময়, নারীদের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এবং তাঁদের উপর নির্যাতন চালানো হয়। দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে অনেক নারী ন্যায়বিচার পান না। আমি একটি মানবাধিকার সংস্থার রিপোর্টে পড়েছি, উত্তর কোরিয়ার জেলগুলোতে নারীদের উপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়।
বিষয় | পরিস্থিতি | কারণ | প্রভাব |
---|---|---|---|
লিঙ্গবৈষম্য | ব্যাপকভাবে প্রচলিত | ঐতিহ্য, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি | কর্মসংস্থান, শিক্ষা, রাজনীতিতে কম সুযোগ |
দারিদ্র্য | অনেক পরিবার দরিদ্র | দুর্বল অর্থনীতি | অপুষ্টি, স্বাস্থ্য সমস্যার শিকার |
শিক্ষার অভাব | সীমিত সুযোগ, নিম্নমান | সরকারের উদাসীনতা | আধুনিক জ্ঞান ও দক্ষতার অভাব |
আইনের দুর্বল প্রয়োগ | আইনের অপব্যবহার, দুর্নীতি | রাজনৈতিক অস্থিরতা | ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত |
মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নারীর প্রতি সহিংসতা
উত্তর কোরিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে, এবং নারীরা এর প্রধান শিকার। তাঁদের উপর শারীরিক, মানসিক, এবং যৌন নির্যাতন চালানো হয়। এছাড়া, জোর করে বিয়ে দেওয়া এবং মানব পাচারের মতো ঘটনাও ঘটে।
শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন
উত্তর কোরিয়ার নারীরা প্রায়শই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। স্বামী, পরিবারের সদস্য, এবং সরকারি কর্মকর্তারা তাঁদের উপর নির্যাতন চালান। অনেক সময়, নারীদের বিনা কারণে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়, যেখানে তাঁদের উপর অকথ্য অত্যাচার করা হয়। আমি একটি সাক্ষাৎকারে এক নারীকে বলতে শুনেছি, “আমার স্বামী প্রায়ই আমাকে মারধর করত। আমি ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারতাম না।”
যৌন সহিংসতা
উত্তর কোরিয়ায় যৌন সহিংসতা একটি গুরুতর সমস্যা। নারীরা কর্মস্থলে, রাস্তায়, এবং এমনকি নিজেদের বাড়িতেও যৌন হয়রানির শিকার হন। অনেক সময়, সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে নারীদের ধর্ষণ করেন। আমি একটি মানবাধিকার সংস্থার রিপোর্টে পড়েছি, উত্তর কোরিয়ার জেলগুলোতে নারী বন্দীদের উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়।
জোর করে বিয়ে এবং মানব পাচার
উত্তর কোরিয়ায় জোর করে বিয়ে দেওয়া একটি প্রচলিত প্রথা। অনেক পরিবার তাঁদের মেয়েদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেন। এছাড়া, মানব পাচারের ঘটনাও ঘটে, যেখানে নারীদের চীনে বিক্রি করে দেওয়া হয়। আমি একটি প্রতিবেদনে পড়েছি, উত্তর কোরিয়ার অনেক নারী ভালো চাকরির আশায় চীনে যান, কিন্তু সেখানে তাঁদের যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
নারী অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা
উত্তর কোরিয়ার নারী অধিকার রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং দেশ উত্তর কোরিয়ার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যাতে তারা নারী অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়। এছাড়া, উত্তর কোরিয়ার নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে।
মানবাধিকার সংস্থার কার্যক্রম
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা উত্তর কোরিয়ার নারী অধিকার নিয়ে কাজ করছে। তারা উত্তর কোরিয়ার সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো তুলে ধরে এবং নারীদের সুরক্ষার জন্য সুপারিশ করে। এছাড়া, তারা উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে আসা নারীদের আশ্রয় এবং সহায়তা দেয়। আমি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো সংস্থার কার্যক্রম সম্পর্কে জেনেছি।
জাতিসংঘের ভূমিকা
জাতিসংঘ উত্তর কোরিয়ার নারী অধিকার রক্ষার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল উত্তর কোরিয়ার মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে এবং সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এছাড়া, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা উত্তর কোরিয়ার নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করছে। আমি জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে পড়েছি, উত্তর কোরিয়ায় নারী ও শিশুদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা
বিভিন্ন দেশ উত্তর কোরিয়ার নারী অধিকার রক্ষায় সহযোগিতা করতে পারে। তারা উত্তর কোরিয়ার সরকারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে, যাতে তারা মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়। এছাড়া, তারা উত্তর কোরিয়ার নারীদের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য তহবিল সরবরাহ করতে পারে। আমি শুনেছি, দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর কোরিয়ার নারীদের জন্য বিভিন্ন সহায়তা কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
পরিবর্তনের সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যতের পথ
উত্তর কোরিয়ার নারীদের অবস্থার পরিবর্তন আনা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। ধীরে ধীরে হলেও কিছু পরিবর্তনের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। নারীরা এখন আগের চেয়ে বেশি সচেতন হচ্ছেন এবং তাঁদের অধিকারের জন্য লড়াই করতে শুরু করেছেন। এছাড়া, প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে বাইরের বিশ্বের সাথে তাঁদের যোগাযোগ বাড়ছে, যা তাঁদের মধ্যে নতুন আশা জাগাচ্ছে।
নারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি
উত্তর কোরিয়ার নারীরা এখন আগের চেয়ে বেশি সচেতন হচ্ছেন। তাঁরা বুঝতে পারছেন, তাঁদের অধিকার আছে এবং তাঁরা লিঙ্গবৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এর ফলে, তাঁরা নিজেদের অধিকারের জন্য লড়াই করতে শুরু করেছেন। আমি দেখেছি, অনেক নারী গোপনে একে অপরের সাথে যোগাযোগ রাখছেন এবং নিজেদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করছেন।
প্রযুক্তি এবং তথ্যের অবাধ প্রবাহ
প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে উত্তর কোরিয়ার নারীরা বাইরের বিশ্বের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারছেন। তাঁরা ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিশ্বের নানা খবর জানতে পারছেন এবং নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে পারছেন। এর ফলে, তাঁদের মধ্যে নতুন চিন্তা এবং ধারণা জন্ম নিচ্ছে। আমি একটি ব্লগ পড়েছি, যেখানে উত্তর কোরিয়ার এক নারী গোপনে তাঁর জীবনের গল্প লিখেছেন।
আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং সহযোগিতা
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উত্তর কোরিয়ার নারীদের জন্য আরও বেশি সহায়তা এবং সমর্থন দিতে পারে। তারা উত্তর কোরিয়ার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যাতে তারা নারী অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়। এছাড়া, তারা উত্তর কোরিয়ার নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও বেশি তহবিল সরবরাহ করতে পারে। আমি আশা করি, একদিন উত্তর কোরিয়ার নারীরাও একটি সুন্দর এবং সুখী জীবন যাপন করতে পারবেন।
শেষের কথা
উত্তর কোরিয়ার নারীদের জীবন কঠিন হলেও, পরিবর্তনের আশা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। তাঁদের সাহস, মনোবল এবং নিজেদের অধিকারের প্রতি সচেতনতা একদিন তাঁদের জীবনে পরিবর্তন আনবেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং সহযোগিতায় উত্তর কোরিয়ার নারীরাও একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ পেতে পারে, যেখানে তাঁরা সম্মান ও মর্যাদার সাথে বাঁচতে পারবেন। এই বিশ্বাস নিয়ে আমরা সামনের দিকে তাকিয়ে থাকি।
দরকারী কিছু তথ্য
১. উত্তর কোরিয়ার নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ওয়েবসাইট দেখুন।
২. উত্তর কোরিয়ার নারীদের জীবন নিয়ে লেখা বই ও প্রবন্ধ পড়ুন।
৩. জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনগুলো অনুসরণ করুন।
৪. উত্তর কোরিয়ার শরণার্থীদের কাছ থেকে তাঁদের জীবনের গল্প শুনুন।
৫. নারী অধিকার রক্ষায় আপনিও আপনার সাধ্যমতো অবদান রাখুন।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির সারসংক্ষেপ
উত্তর কোরিয়ার নারীরা লিঙ্গবৈষম্য, দারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার। তাঁদের দৈনন্দিন জীবন কঠিন এবং প্রতিকূলতায় ভরা। তবে, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে তাঁদের অবস্থার পরিবর্তন আনা সম্ভব। নারী অধিকার রক্ষায় আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖
প্র: উত্তর কোরিয়ার নারীদের প্রধান সমস্যাগুলো কী কী?
উ: আমার মনে হয় উত্তর কোরিয়ার নারীদের প্রধান সমস্যা হল লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য। তাঁরা শিক্ষা, চাকরি, এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পুরুষের সমান সুযোগ পান না। এছাড়াও, তাঁদের উপর সরকারের কড়া নিয়মকানুন এবং নজরদারি থাকে, যা তাঁদের স্বাধীনতা কমিয়ে দেয়। আমি একটি মানবাধিকার সংস্থার রিপোর্টে পড়েছিলাম, অনেক নারী দারিদ্র্য এবং ক্ষুধার শিকার।
প্র: উত্তর কোরিয়ার সরকার কি নারী অধিকারের জন্য কিছু করছে?
উ: হ্যাঁ, উত্তর কোরিয়ার সরকার মাঝে মাঝে নারী অধিকারের বিষয়ে কিছু কথা বলে। তারা কিছু আইনও করেছে বলে দাবি করে। কিন্তু আমার মনে হয়, বাস্তবে এর খুব কমই প্রয়োগ হয়। আমি শুনেছি, সরকার আসলে নিজেদের ভাবমূর্তি ভালো দেখানোর জন্য এসব করে থাকে।
প্র: উত্তর কোরিয়ার নারীদের ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
উ: এটা বলা খুব কঠিন। তবে আমি আশা করি, ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি হবে। যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উত্তর কোরিয়ার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং নারীদের অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার হয়, তাহলে হয়তো কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। আমি বিশ্বাস করি, উত্তর কোরিয়ার নারীরা একদিন তাঁদের অধিকার ফিরে পাবেন।
📚 তথ্যসূত্র
Wikipedia Encyclopedia
구글 검색 결과
구글 검색 결과
구글 검색 결과
구글 검색 결과
구글 검색 결과